পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১২

সাম্প্রতিক ঘটনা এবং বিক্ষিপ্ত চিন্তা



সংগ্রহীত
গত ২২ ও ২৩ শে সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে , ৩০ শে সেপ্টেম্বর পটিয়া এবং রামুতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পর অনেকের প্রতিক্রিয়া, প্রবন্ধ, পত্রিকার খবরগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়ার চেষ্টা করেছি । তার উপর ভিত্তি করেই আমার এই লেখাটি ।

সংগ্রহীত
সংগ্রহীত
 
সংগ্রহীত
প্রথমে ফিরে দেখা যাক কি ঘটেছিল সেই দিনগুলোতে, পত্র পত্রিকা, বিভিন্ন সংগঠনের বিবৃতি, কয়েকজন ভুক্তভোগি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে গত ২২ শে সেপ্টেম্বর (  রাঙ্গামাটি ) দুজন ছাত্রের সামান্য কথা কাটাকাটিকে  কেন্দ্র করে মুহুর্তের মধ্যে সারা শহরে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে । যদিও এখনও জানা যায়নি সে দুজন কে ছিলো বা জানলেও কেউ মুখ খুলছে না । লোকালয়, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, আফিস, বাজার ইত্যাদি স্থানে সংঘর্ষ বা নিরীহ পাহাড়িদের উপর হামলা ব্যাপক আকার ধারন করে । প্রদত্ত তথ্য মতে, একপাক্ষিকভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা সংগঠিতভাবে পরিচালিত হয় । মনে রাখা ভালোএই ঘটনাটির আগে বিক্ষিপ্তভাবে শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের খবর পাওয়া গিয়েছিল , এমনকি বিভিন্ন সংগঠন প্রকাশ্যে প্রয়াত রাজার মরদেহ দেশে আনা এবং জেলা পরিষদের পুলিশ নিয়োগের বিরোধিতা করে আসছিলেন । পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী মাঠে নামলেও তাদের সামনে দাঙ্গাকারীরা সাম্প্রদায়িক শ্লোগান দিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়িয়েছে এবং হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ১৪৪ জারি করা সত্ত্বেও রাস্তায় দাঙ্গাবাজদের উপস্থিতি ছিল এবং আদিবাসীদের লোকালয়ে হামলা হয়েছিল । অবাক লাগে পরিস্থিতি মোকাবেলার নামে সেনাবাহিনী আদিবাসী লোকালয়ের সম্মুখভাগে অবস্থান না নিয়ে ভিতরে অবস্থান করতে দেখে । সবচেয়ে প্রশ্ন জাগার বিষয়, ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার হতে ২০০ গজ ও সেনাজোন হতে ১০০ গজেরও কম দূরত্বের মধ্যেও পার্বত্য জেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুস্থিত বৈঠকে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১১ জন আদিবাসী চেয়ারম্যানকে মারাত্বকভাবে আহত করে । যা থেকে প্রমাণিত হয় আদিবাসীরা কোথাও নিরাপদ নয়, সরকার আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ । অথচ সেনাবাহিনী আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ প্রশাসনকে সাহায্য করার নামেই ১৯৭৬ সন হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছে । আবার ২৩ শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৮ ঘটিকার দিকে ৫-৬ শত হামলাকারী লিচুবাগানে সঙ্গথিতভাবে হামলা চালায় , দিনের বেলায়ও কতিপয় স্থানে হামলা হয়েছিল । প্রশাসন সজাগ থাকলে কিভাবে এইরুপ ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারে ?? ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতেও অনুরূপ ঘটনা ঘটতে আমরা দেখেছি ।

রাঙ্গামাটির ঘটনার ঘা শুকাতে না শুকাতেই কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় গত (৩০/০৯/১২ ) রাতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের পাঁচটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে দুষ্কৃতকারীরা। এতে দগ্ধ হয়ে বুচি শর্মা (৭০) নামের এক বৃদ্ধা মারা গেছেন। উখিয়া উপজেলায় চারটি বৌদ্ধবিহারে ভাঙচুর ও একটি বিহারে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লে টেকনাফে অন্তত ১৫ জন ও উখিয়ায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়। 
এর আগে গত শনিবার রাতে জেলার রামু উপজেলা সদরে দুষ্কৃতকারীদের একাধিক দল বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের শত বছরের পুরোনো ১২টি বৌদ্ধবিহার ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে। পুড়িয়ে দেয় বৌদ্ধপল্লির ৪০টির মতো বসতবাড়ি। ভাঙচুর করে শতাধিক ঘরবাড়িতে।
বৌদ্ধধর্মাবলম্বী এক তরুণের ফেসবুকে (সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম) পবিত্র কোরআন শরিফের অবমাননাকর ছবি ব্যবহার করা হয়েছেএমন অভিযোগে শনিবার গভীর রাতে ওই হামলা চালানো হয়। একই অভিযোগে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় দুটি বৌদ্ধবিহার ও একটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনার পর গতকাল সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রামু সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সকাল থেকে সড়কে গাড়ি নিয়ে টহল দেন সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। মন্দিরগুলোতে নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 
জানা যায়, রাত ১১ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত হামলা হলেও সকালে তবেই অনির্দিষ্টকালের জন্য রামু সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
বিগত ১৪ বছরেও গ্রহনযোগ্য মাত্রায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হয়নি । বর্তমান সরকার বিগত ৪৪ মাসে, চুক্তির নুন্যতম অংশও বাস্তবায়ন করেনি, বিগত ১৮ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় প্রথাগত নেতৃত্বের এক প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস নামক মুলাটি আবারো প্রদর্শন করলেন , অথচ ঐ দিনই সেটেলার বাঙালী কতৃক দিঘীনালাতে এক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায় ।  একি চুক্তি বাস্তবায়নের নমুনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ? শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে সমতলের কয়েক লক্ষ গরিব ও দুস্থ বাঙালীকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢুকিয়ে পাহাড়ি – বাঙালী সমস্যা সৃষ্টি করেছে, পাহাড়ি – সেটেলারদের মুখোমুখি করিয়েছে । এই বাঙালী সেটেলাররা আজ চরম্ভাবে বিপদগ্রস্থ, বছরের পর বছর গুছগ্রামে বসবাস করছেন । ফেসবুকে একটি পেজ চোখে পড়ে  “পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙ্গালী অধিকার আন্দোলন (C.H.T Bengali Rights Movement)তাদের দাবীর উপর পূর্ণ সমর্থন রেখে সরকারের কাছে দাবী জানায় চুক্তি মোতাবেক তাদেরকে স্বসন্মানে তাদের যেখান থেকে আনা হয়েশে সেখানে পূনর্বাসন করা হোক । সে সাথে বিনীত আহবান অধিকারের নামে বিভ্রান্তি বা সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দান থেকে বিরত থাকুন । আদিবাসী ভাইদের অনুরোধ, কুকুর কামড়ালে আমরা কুকুরকে কামড়াতে পারি না, তাই তাদের পোস্ট এ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ছবি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ।
সোহরাব হাসানের সাথে আমি সহমত পোষণ করি প্রধানমন্ত্রী, শান্তিটা বাংলাদেশেও দরকার
১৯৪৭, ১৯৭১ সালে যে রাজনৈতিক অদূরদর্শীতার প্রমাণ দিয়েছিলাম, ১৯৮৩,১৯৯৭,২০০৫,২০০৯ সালে এক তরফা স্বিদ্ধান্ত এবং সমন্বয়হীনতার পরিচয় নিয়েছি তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে । ব্রিটিশরা বলেছিল, এক কেজি জ্যান্ত ব্যাঙ একপাল্লায় যেদিন পরিমাপ করা যাবে সেদিন পাহাড়িরা একতাবদ্ধ হতে পারবে এবং বাংলাদেশ সরকার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী বানিয়ে আমাদের হেয় করার জবাব একমাত্র একতাবদ্ধ জুম্ম জাতি দিতে পারে । আসুন একতাবদ্ধ হয়ে রাঙ্গামাটি, রামুসহ প্রত্যেকটি ঘটনার তদন্তের এবং দোষীদের শাস্তি দানের দাবী জানায়, সোচ্চার হয়, পক্ষপাতপুস্ঠ সেনাবাহিনীকে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করা হোক, পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে । আসুন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সরকারের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায় । কোন একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে অতি আবেগপ্রবণ না হয়ে যুক্তির বিচারে পারস্পরিক সংঘাত বন্ধের প্রচেষ্টা চালায় এবং রাজনৈতিক দলসমূহকে নূন্যতম কর্মসূচি নিয়ে হলেও ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম চালাতে উদ্ভুদ্ধ করি ।

মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২

আজো কি শুনিনি


আজও কি শুনিনি সেই মায়াকান্না,
কেউ কি আজও অনুভব করিনি সেই চিরচেনা ব্যাথা ??


আর কত রবো নিরবে,
রক্তে কি আমার জুম্ম জাতীয়তাবাদ না রবে ?


আর কত দিন সইবে অনাচার, অত্যাচার, আর কত হারাবে জমি ।
আজও কি তেষ্টা মিটে না, আর কত রক্ত চাও তুমি ?


হে স্বঘোষিত নির্ধারক, আজও কি শুননি সেই মায়াকান্না !
কত আর ঝড়াবে নিজেদের রক্ত, কবে বুঝবে কোথায় সেই চিন চিনে ব্যাথা ?


আজও তারা ভুলেনি এম এন লারমা তাদের রক্তে,
আজও জ্বলে তাদের বুক, আজও ভুলেনি তারা লড়তে।


জেনো আজও অভাগারা বুনে চলেছে স্বপ্ন,
তোমাদের দিকেই তাকিয়ে সবাই কোরো না যেন তাদের আসা ভঙ্গ 

কি হবে জেনে


কি হবে জেনে আজ কেমন আছি,
কি হবে জানিয়ে ভালবাসি !

তুমি হয়তো আছো আজো সেই তুমি,
আমি যে পারিনি থাকতে সেই তোমার চেনা আমি ।

জানি তুমি ছিলে, আজো আছো, মনের কোনো এক গোপন ঠিকানায়,
তবু দিন বদলায়, বদলেছি আমি সময়ের তরে কোনো এক অজানায় ।

সহস্র দিন পর পিছু ফিরে যদি ডাকো আমায়,
বুকচাপা দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিই বা দেবো তোমায় !!

তুমি পারোনি, পারোনি তুমি যেমন চেয়েছিলে রাখিতে আমায়,
তাইতো বদলেছি আমি, বদলিয়েছে সময় আমায় ।

হঠাৎ চলেগিয়েছিলে, কেনই বা আবার ফিরে এলে !
কিসের আশায় এসেছো, কেনইবা গিয়েছিলে ?

জানি, তুমি কষ্ট পাবে এখন, যেমন আমায় দিয়েছিলে,
তবু ...
ক্ষমা কোরো আমায়, পারিনি হতে তখন তুমি যেমন চেয়েছিলে ...